২৫—৩০ বছর আগে স্বামী জোয়াদ আলী মারা গেছেন। এর পর থেকেই অসহায় অবস্থায় দিন কাটালেও পাচ্ছেন না সরকারি কোনো সহযোগিতা। তিন ছেলে ও দুই মেয়ে থাকলেও কেউ তেমন সচ্ছল নন। বলছিলাম টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার যদুনাথপুর ইউনিয়নের শ্রী হরিপুর বারইপাড়ার বিধবা সহিতন বেওয়ার কথা। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তাঁর বয়স এখন ১০৬ বছর। ইউপি সদস্যদের শাশুড়ির নামে ভাতার কার্ড হলেও আর কত বয়স হলে পাবেন সরকারী কোন ভাতার কার্ড এমন প্রশ্ন এক বৃদ্ধ বিধাবা এই নারীর।
স্থানীয় বাসিন্দাদের ধারণা, সহিতন বেওয়া এ অঞ্চলের সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ নারী। তিনি অন্যের সাহায্য—সহযোগিতায় চললেও তাঁর ভাগ্যে জোটেনি বয়স্ক ভাতার কার্ড। মেয়ের সংসারে থিতু হয়েছেন। জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে ঘুরলেও কার্ড মেলেনি তাঁর। অথচ এক ইউপি সদস্য তাঁর শাশুড়িকে বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সরজমিনে গিয়ে জানা গেছে, সহিতন বেওয়ার দুই মেয়ের আলাদা সংসার। বড় ছেলে মারা গেছেন তিন বছর আগে। অন্যরা তাঁর ঠিকমতো ভরণ— পোষণ দিতে পারেন না। ফলে অন্যের সহযোগীতা থেকে পাওয়া নিজের আয় উল্টো ছেলে—মেয়ের সংসারে দিতে হয়েছে তাঁকে। এক মেয়ে তা স্বীকারও করেছেন। একাধিকবার ইউনিয়ন পরিষদে গেছেন বয়স্ক ভাতার কার্ড পাওয়ার আশায়। তবে তাঁর কপালে জোটেনি।
জানা গেছে, সরকারি নির্দেশনায় নারীদের বয়স্ক ভাতা প্রাপ্তির সর্বনিম্ন বয়স ৬০ এবং পুরুষের ৬৫ বছর। কিন্তু শতবর্ষী সহিতন বয়স্ক ভাতার কার্ড পাওয়ার ক্ষেত্রে উপেক্ষিত হওয়ার কারণ কেউ জানাতে পারেননি।
জাতীয় পরিচয়পত্রে সহিতনের জন্ম তারিখ ১৯১৮ সালের ১ এপ্রিল। মেয়ে জেলেমন ও নাতি এরশাদ সহ পরিবারের অন্য স্বজনদের অভিযোগ, সাবেক ইউপি সদস্য আছর আলী ও বর্তমান ইউপি সদস্য শাহজাহান আলীর কাছে বয়স্ক ভাতার জন্য অনুরোধ করেও কার্ড পাওয়া যায়নি। নির্বাচনের আগে তারা কার্ড দেওয়ার প্রতিশ্রম্নতি দিলেও কেউ কথা রাখেননি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য শাহজাহান আলী বলেন, তিনি দুটি বয়স্ক ভাতার কার্ড পেয়েছিলেন। তার একটি আজম নামের একজনকে এবং অন্যটি তাঁর শাশুড়িকে দিয়েছেন বলে জানান।
যদুনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসক এবং উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সায়েম ইমরান বলেন, আমি খোঁজ খবর নিয়ে দেখে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।