ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে আধিপত্য বিস্তারের দ্বন্দ্বে যুবদলের দুই কর্মী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও পাঁচজন। গত মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) রাতে ও বুধবার (৭ আগস্ট) দুপুরে পৃথক পৃথক সংঘর্ষে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এছাড়া বাড়িঘরে হামলা ভাঙচুর ও মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- উপজেলার ষোলাশিয়া গ্রামের বাসিন্দা মকবুল ইসলাম মডুর ছেলে জসীম উদ্দিন (৩৪) এবং রৌহা গ্রামের বাবুল আকন্দের ছেলে মো. সবুজ আকন্দ (৩২)। তারা দুজনই যুবদলের কর্মী বলে জানিয়েছে স্থানীয় একাধিক সূত্র।
তবে ময়নাতদন্ত ছাড়াই নিহতদের মরদেহ দাফন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। একইসঙ্গে দেশের চলমান পরিস্থিতিতে পুলিশ কর্মবিরতিতে থাকায় এই দুই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কোনো ধরনের আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হয়নি বলেও জানা গেছে।
স্থানীয়রা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে উপজেলা যুবদলকর্মী জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে পৌর শহরের নতুনবাজার ম্যাক্সিস্ট্যান্ড দখল করতে যান তার সমর্থকরা। এ সময় যুবদলের আরেক পক্ষ সুমনের সমর্থকদের সঙ্গে তাদের দ্বন্দ্ব হলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে সুমনের সমর্থকরা জসিম উদ্দিনকে কুপিয়ে জখম করলে গুরুতর অবস্থায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এই সংঘর্ষে তুষার, আবদুল হামিদ, মাহবুব, সুবল মোদক নামে যুবদলের আরও কয়েকজন কর্মী আহত হন। তারা বর্তমানে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে।
এদিকে জসিম নিহতের প্রতিবাদে ওইদিন বিকেলে তার মরদেহ নিয়ে পৌর এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেন বিএনপির একাংশের নেতা-কর্মীরা। এতে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে বেশ কিছু বিএনপি নেতা-কর্মীর বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে বঙ্গবন্ধুর মাজারে শপথ নিলেন আ. লীগের নেতারা
এর আগে মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে পৌর এলাকার কাচারি রোড রেলক্রসিং এলাকায় সবুজ আকন্দ নামের যুবদলের আরেক কর্মীকে হত্যার ঘটনা ঘটে। মেহেদী নামক এক যুবকের সঙ্গে নিজেদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তের বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান, সবুজ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কোনো রাজনৈতিক বিষয় ছিল না। তারা সুযোগসন্ধানী, মাদকসেবী ও অপরাধী। তাদের কোনো নির্দিষ্ট দল নেই।
এই বিষয়ে জানতে পুলিশের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বিএনপি সূত্র জানায়, গফরগাঁও উপজেলায় বিএনপি পাঁচটি গ্রুপে বিভক্ত। কেউ কারও নেতৃত্ব মানতে নারাজ। মূলত আধিপত্য দ্বন্দ্বে এই দুটি খুনের ঘটনা ঘটেছে।