মঙ্গলবার, অক্টোবর ২২, ২০২৪

ধনবাড়ীতে শুরু হয়েছে বারোমাসি সজনে চাষ

হাফিজুর রহমান:
প্রকাশের সময় : June 30, 2024 | বাংলাদেশ

ধনবাড়ীতে শুরু হয়েছে বারোমাসি সজনে চাষ
ধনবাড়ীতে শুরু হয়েছে বারোমাসি সজনে চাষ

প্রথমবারের মত বাণিজ্যিকভাবে টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলায় শুরু হয়েছে থ্রি—স্ট্রার জাতের উচ্চ ফলনশীল বারোমাসি সজনে চাষ। সজনে শীতকালীন সবজি হলেও এটি ফলবে এখন সব মৌসুমে ভেষজ ও পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এ সজনের ডাঁটা। সজনে ডাঁটা ভোজন রসিকদের বেশ পছন্দের খাবার। তাই, দাম ও চাহিদাও রয়েছে বেশ।

উপজেলার মুশুদ্দি ইউনিয়নের মুশুদ্দি মধ্যপাড়া গ্রামের কৃষি উদ্যোক্তা রেজাউল করিম (আব্দুল হক) বছরজুড়ে এই সজনের চাষ শুরু করছেন। এটি চাষে খরচ ও সময় কম লাগায় ৪০ শতক জমিতে সজনে বাগান করছেন তিনি। তাঁর দেখাদেখি এটি চাষে আগ্রহী হচ্ছেন অনেকে।

মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে উন্নত জাতের সজনের আবাদ বাড়াতে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে বলে জানান কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ ও উদ্যানতত্ত্ববিদ কার্যালয়। তাঁরা আরও জানায়, বারোমাসি সজনের গাছ দ্রুত বাড়ে। চারা রোপণের সাত থেকে আট মাসেই ডাঁটা ধরে এবং সারা বছরই ডাঁটা সংগ্রহ করা যায়। লাগেনা তেমন কোনো পরিচর্যা। থ্রি—স্ট্রার এই জাতের সজনে খেতেও সু—স্বাদু। পূর্ণবয়স্ক একটি গাছে দেড় হাজারের অধিক ডাঁটা হয়। ১০ থেকে ১২টিতে কেজি অতি সহজে চারা উৎপাদন করা যায়। বিঘা প্রতি (৩০ শতক) জমিতে ৯০—১০০টি গাছের চারা রোপণ করা যায়।

বাজারে সজনের চাহিদা ও দাম থাকায় এই সজনে চাষ শুরু করছেন বলে জানান সজনে চাষী রেজাউল করিম। তিনি বলেন, ‘চারা লাগানোর আট মাস পর থেকেই গাছের ডগায় ডগায় সজনের ডাঁটা আসে। রোগবালাই ও উৎপাদন খরচ নেই বললেই চলে। প্রতি বিঘা সজনে বাগান করতে সর্বোচ্চ খরচ হয় ২০ হাজার টাকা। প্রতি কেজি সজনে ১০০ থেকে ১১০ টাকা দরে পাইকাররা বাগান থেকেই কিনে নিচ্ছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘পরিবারিকভাবে বাগানটি দেখবাল করা হচ্ছে। আশা করি প্রথমবারই বাম্পার ফলন পাব। একটি গাছের গড় আয়ূ ১০ থেকে ১২ বছরের অধিক হয়।’

কৃষক ও কৃষি উদ্যোক্তাদের উদ্বুদ্ধ করতে সজনে ‘মাতৃ বাগান’ গড়ে তোলা হয়েছে বলে জানান ধনবাড়ী হর্টিকালচার সেন্টার কার্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ববিদ রাসেল পারভেজ তমাল। তিনি আরোও বলেন, ‘নতুন এই সজনের বিশেষত্ব হচ্ছে, এটি সারাবছই ধারণক্ষমতাসম্পন্ন জাত। বাছাইপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে এ জাতটি অবমুক্ত করা হয়েছে। দেশে সজনের অত্যধিক চাহিদা আছে বছরব্যাপী। এটি বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদের পর্যাপ্ত সুযোগ রয়েছে।’

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের কৃষি কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান জানান “এইচ আর নিউজ টুয়েন্টিফোর”কে, ‘প্রথম বারের মৃত রেজাউল করিম বারোমাসি এ সজনের চাষ শুরু করছেন। এটি একটি সুপার ফুড। সজনের পাতাও মানবদেহের জন্য খুবই উপকারী। জেলা খামারবাড়ী টাঙ্গাইলের পক্ষ থেকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বাগানটি ইতিমধ্যে পরিদর্শন করছে। যদি কোনো কৃষক বা কৃষি উদ্যোক্তা এই জাতের সজনের চাষ করতে চায়, তাহলে আমরা সব ধরণের সহযোগিতা করবো।’



এই ক্যাটাগরির অনন্যা খবর